উন্নয়ন চেয়ে অনেক বেশি লুটপাট হয়েছে

উন্নয়ন চেয়ে অনেক বেশি লুটপাট হয়েছে

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের এমপি বলেছেন, দেশে এখন গণতন্ত্রের লেশমাত্র নেই। মানুষের অধিকার বলেও কিছু নেই। শাসক আর প্রশাসক ছাড়া মাঝখানে আর কেউ নেই, কিছু নেই। বলা যেতে পারে দেশে এখন কার্যত রাজতন্ত্র চলছে। কোনো ধরনের জবাবদিহিতা ছাড়াই দেশ চলছে। রাজনৈতিক দল এবং রাজনীতিবিদদেরও এখন কোনো গুরুত্ব নেই। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচার, অনিয়ম এবং অপশাসন। দেশের মানুষ এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে।

তিনি আরও বলেন, সরকার মেগা প্রকল্পের নামে লুটপাট করছে। উন্নয়নের নামে ব্যয় বাড়াচ্ছে। কেবল সুইস ব্যাংকেই এক বছরে চার হাজার কোটি টাকা জমা করেছে এ দেশের কিছু লোক। আরও অনেক দেশে অর্থ পাচার হচ্ছে। বেগমপাড়ার খবর তো সবাই জানে। এসব অপ্রিয়, কিন্তু সত্যি কথাগুলো আমি এবং আমরা বলছি। এতে কেউ অসন্তুষ্ট হতে পারেন। কিন্তু কিছু করার নেই। আবারও বলছি, এই সরকার যত না উন্নয়ন করেছে, তার চাইতেও বহুগুণ করেছে লুটপাট এবং দুর্র্নীতি। এই সরকারের আমলে যত দুর্নীতি হয়েছে, যত টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে তা আর অতীতে কখনো হয়নি।

বুধবার যুগান্তরকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে জিএম কাদের এসব কথা বলেন। জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় ‘রজনীগন্ধায়’ দেওয়া এই সাক্ষাৎকারে তিনি বর্তমান সরকারের সফলতা-ব্যর্থতার চিত্র অকপটে তুলে ধরার পাশাপাশি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন, এই নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ভূমিকা, জোটবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি, আগামী দিনের সংকট, জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের হঠাৎ করে কাউন্সিল আহবান, এর পরপরই তাকে বিরোধীদলীয় নেতার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়াসহ দলের এবং দলের বাইরের নানা বিষয় নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন।

জিএম কাদের বলেন, সরকার জানে তারা দেশ পরিচালনায় পুরোপুরি ব্যর্থ। দেশের মানুষ আর তাদের রাষ্ট্রক্ষমতায় দেখতে চায় না। অবাধ, নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠু ভোট হলে তারা আর ক্ষমতায় আসতে পারবে না। এজন্য তারা অতীতের মতোই নিজেদের মনমতো সাজানো ছকের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আবারও রাষ্ট্রক্ষমতায় আসতে চায়। মানুষ ভোট দিতে পারুক কী না পারুক তাতে তাদের কিছু যায় আসে না। নির্বাচন কমিশনও সরকারের হয়ে সেই ছকে বাঁধা সাজানো নির্বাচন আয়োজনের পথে হাঁটছে। বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল ইভিএমের বিপক্ষে মতামত দিয়েছে। কিন্তু সরকারি দল চায় ইভিএমে নির্বাচন। তাই নির্বাচন কমিশনও ইভিএমে ভোট করতে চায়। বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল চায় নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড। কিন্তু এর ঠিক উলটোপথে হাঁটছে নির্বাচন কমিশন। এটা হলে দেশের রাজনীতিতে বড় ধরনের দুর্যোগ আসবে।